Nov 26, 2019
পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ বিনির্মানের লক্ষ্যে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি খাতে বিপুল বিনিয়োগ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ওয়েস্ট টেকনোলজিস এলএলসি, গতকাল (২৫ নভেম্বর , ২০১৯, সোমবার )প্রবাসী বিজ্ঞানী ও যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক ওয়েস্ট টেকনোলজিস এলএলসি প্রতিষ্ঠানের সিইও ড. মঈনউদ্দিন সরকার এবং ড. আনজুমান বেগম বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এর কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী চেয়ারম্যান মোঃ সিরাজুল ইসলাম এর সাথে সাক্ষাৎকালে এ আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।
সাক্ষাতকালে, তাঁরা বাংলাদেশের পরিবেশ দূষণ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে আলোচনা করেন। এসময় ড. মইনউদ্দিন বলেন, ‘সারা দুনিয়ায় দিনে দিনে বাড়ছে প্লাস্টিক সামগ্রীর ব্যবহার, সেই সঙ্গে আমাদের চার পাশে জমছে প্লাস্টিক বর্জ্য, যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠেছে। প্লাস্টিক পচনশীল নয় বিধায় মাটি হারাচ্ছে তার উর্বরতা শক্তি। খালগুলো ভরাট হয়ে যাচ্ছে, নদী তার নাব্যতা হারাচ্ছে, ড্রেনের পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা রোধ হচ্ছে। ফলে মশা-মাছির প্রকোপ বেড়েই যাচ্ছে, বৃষ্টি হলে শহরে নৌকা চালাতে হচ্ছে। প্লাস্টিক ও পলিথিনের প্রাদুর্ভাবে বন ও জলজ জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের দিকে চলে যাচ্ছে।’ এসময়ে ড. মইনউদ্দিন জানান তিনি বাংলাদেশর সব সিটিকর্পোরেশন সহ অনেক গুলো পৌরসভা পরিদর্শন করছেন, বর্তমানে বর্জ্যের ভাগাড়গুলো অসহনীয় মাত্রায় বৃদ্ধিপাছে সেই সাথে পরিবেশ দূষণসহ নানাবিধ স্বাস্থ্য ঝুঁকি বেড়েই চলছে। তাই পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ গড়তে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশে বড় ধরনের বিনিয়োগ করতে চায় ওয়েস্ট টেকনোলজিস এলএলসি ।
ওয়েস্ট টেকনোলজিস এলএলসি এর প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় কালে বিডা-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান মোঃ সিরাজুল ইসলাম বলেন পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা আমাদের সকলের জন্য অনেক বড় দায়িত্ব, সুন্দর আগামীর জন্য পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ বিনির্মানের বিকল্প নেই, তাই আমাদের পরিকল্পিত ভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, আর এ লক্ষ্য সবাইকে সচেতন ভাবে কাজ করে যেতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে “দূষণ ও বর্জ্যমুক্ত পরিচ্ছন্ন পরিবেশ বিনিয়োগ বৃদ্ধির অন্যতম পূর্বশর্ত”।
আলাপকালে প্রতিনিধিদল বলেন তাদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তির মাধ্যমে উপাদনের উপর ভিত্তি করে বর্জ্যকে ৭০ ভাগে আলাদা করে ফেলা হয় এবং পরে সেগুলোকে ব্যবহার করা হয়। তাঁরা বলেন বাংলাদেশে প্রতি বছর ২৮ মিলিয়ন মেট্রিক টন মিউনিসিপ্যাল সলিড ওয়্যাস্ট (এমএস ডব্লিউ) বর্জ্য উৎপাদন হয়, যার মধ্যে ১৫ শতাংশই প্লাস্টিক অর্থাৎ ৪.২ মিলিয়ন মেট্রিক টন প্লাস্টিক; এই প্রতি টন পরিত্যক্ত প্লাস্টিক ও পলিথিন বর্জ্য থেকে ১৩০০ লিটার জ্বালানি তেল, ১০ সিলিন্ডার এলপিজি গ্যাস ও ২৩ লিটার জেট ফুয়েল উৎপাদন করা সম্ভব।’ এছাড়া অন্যান্য পচনশীল বর্জ্য থেকে সহজেই জৈব সার ও বায়ো গ্যাস উৎপাদন করা সম্ভব হবে । শুধু বর্জ্য ব্যবহার করেই বাংলাদেশের জ্বলানি তেলের প্রয়োজন মিটানো সম্ভব। ইতোমধ্য রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন ও ওয়েস্ট টেকনোলজিস এলএলসির মধ্যে বর্জ্য আবর্জনা হতে ডিজেল (জ্বালানী), জৈব সার, বায়োগ্যাস তৈরির পাইলট প্রজেক্টের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে উল্লেখ করে ড. মইনউদ্দিন বলেন “ সম্প্রতি আমরা ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ও সেই সাথে বেশ কয়েকটি পৌরসভায় বর্জ্য ব্যবস্থা পযুক্তি নিয়ে আলোচনা করছি। তিনি দক্ষিণ এশিয়ায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ কে মডেল হিসেবে তুলে ধরতে চান যার ফলে এ সেক্টরে অনেক কর্মসংস্থানসহ দক্ষকর্মী তৈরি হবে । তিনি এ ব্যপারে বিডা এর সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।
এসময় বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ -এর নির্বাহী চেয়ারম্যান মোঃ সিরাজুল ইসলাম বিডার পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে বলেন, দূষণমুক্ত পরিচ্ছন্ন উন্নত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সব সময় বিনিয়োগকারীদের পাশেই আছে বিডা। এসময়ে ডেনিম গ্রুপের চেয়ারম্যান জনাব ডঃ নিয়ামুল বসির ও বিডা-এর নির্বাহী পরিষদের সদস্য জনাব নাভাস চন্দ্র মন্ডল উপস্থিত ছিলেন।